ভালবাসা কত প্রকার , জানা খুবই কঠিন । তবে অবুঝ মনের ভালবাসায় সর্বদাই জেগে উঠত , এই প্রশ্নের যে উত্তর দিতে পারবে , তাকে আমি ভালভাসব । কিংবা বয়সন্ধিঃকালে কোন মেয়ের মায়ায় দৈনিক বিদ্যালয়ে হাজির হওয়া , একটু দেখার জন্য মেয়ের কমন রুমের দিকে আড়ালে দৃষ্টিজ্ঞাপন । ক্লাসের ফাঁকে ক্ষীনমনে তাকানো , বা লক্ষ করা সে আমার দিকে তাকিয়েছে কি না ? কিশোর ছেলেটি ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্বপ্নে দেখে তার মনে লুকিয়ে থাকা মানুষটিকে ভালবাসা বড়ই অদ্ভুদ যখন পবিত্রতা থাকে , তখন ভালবাসা হয় না । আর যখন স্বার্থপরতা যুক্ত হয় , তখন হাজারো ভালবাসা পরাধীনতা ও স্বার্থের আড়ালে বিলীন হয়ে যায় । ভেঙে যায় শত সহস্র ত্যাগ করা ভালবাসা , হারিয়ে যায় মায়া ভুলতে না পারা হাজারো জীবন ।
হাসুর জন্ম বিংশ শতাব্দির কয়েক বছর পূর্বে কোন মধ্যবিত্ত মাদ্রাশা শিক্ষকের পরিবারে । হাসু ছোট থেকেই একটু ভিন্ন প্রকৃতির , কথাটা কেমন যেন মনে হয় ? তাই না । আসলেই ভিন্ন প্রকৃতির যেমন, খেলাধুলায় পক্ষ ও প্রতিপক্ষ থাকবে এটাই স্বাভাবিক , কিন্তু কোন সিন্ধান্ত যা তার পক্ষের বিপরীতে গেলেও তা হাসু বলে দিত। হাসু একটু বড় হতেই গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি হয় , তার মায়ের ইচ্ছার কারনে । হাসুর বাবা ও বাধ্য হয় , কারন হাসুর মা ও বাবার বিয়েটা তাদের ভালবাসার চেষ্টার ফল।
হাসুর বাবা অনেক কষ্ট করে তার ছাত্রজীবন সম্পন্ন করে , কাজের খোজে তার মামা শামছু এর কাছে যায় । তিনি বরিশালের সদরের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক ছিলেন । তার কাছে কাজের সুবিধা না করতে পারায় হাসুর বাবার কিছু শুভাকাংক্ষী বরিশাল শহরের অদূরে একটি গ্রামে মাদ্রাশায় শিক্ষকতা করত । সেখানে তার কাজের সুযোগ হয় । পরবর্তীতে হাসুর মায়ের সাথে প্রথম দেখা হয় । পরবর্তীতে অনেক ঝামেলা ও সমস্যা মোকাবেলা করে তাদের সম্পর্ক বিয়েতে গড়ায় । যদিও সেক্ষেত্রে হাসুর খালু আবুল বাসারের অবদান অবিস্মরনীয় । বিয়ের পর হাসুর বাবার গ্রামের একটি মাদ্রাশায় চাকুরি হয় পরিবারসহ ওইখানে বসবাস শুরু করেন ।
প্রাইমারি স্কুল জীবনে হাসু সর্বদা প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখত । শিক্ষকদের ও সহপাঠীদের ভালবাসা ও আদর পেয়ে প্রাইমারি স্কুল জীবন শেষ করে মাধ্যমিক স্তরের লেখাপড়া শুরু করেন । মাধ্যমিক স্তরে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত বাড়ি থেকে কাছের স্কুলে লেখাপড়া করেন , তবে সেক্ষেত্রে ফারুক স্যার অবদান অনেক , তবে এখানে প্রতি শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার লাভ করায় সকল শিক্ষকের ভালবাসার সর্বোচ্চ স্তরে ছিল। পরবর্তীতে ক্লাস নবম শ্রেণিতে উঠার পর হাসু বিজ্ঞান বিভাগ নেয় , তবে সে বিজ্ঞানের একজন ছাত্র হওয়ায় সকল সহপাঠীর ভালবাসা ছিন্ন করে তার বাবার ইচ্ছায় তিনটি পরিক্ষা দিয়ে পরিক্ষার মধ্যে অন্য স্কুলে যেতে বাধ্য হয় ।
হাসু অন্য স্কুল থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করে , বরিশাল শহরের কোন একটি কলেজে ভর্তি হয়ে কলেজ জীবন সম্পন্ন করেন । উচ্চ শিক্ষা জীবনে বরিশালের স্বনামধন্য বিএম কলেজ এ ভর্তি হয়ে ২০১৭ সনে ঢাকায় ইট পাথরের গড়া দেয়ালের মাঝে জীবনযাপন শুরু করেন ।
হাসু ঢাকায় এসে, সবুজবাগ থানার কিছু স্বনামধন্য কোচিং এ খুবই সুনামের সাথে বিজ্ঞান বিভাগের কিছু বিষয় শিক্ষকতা শুরু করে । ছেলেটা ভোলাভালা ও কিছুটা বোকা স্বভাবের এখন ও ঢাকার হালচাল বুঝে উঠতে পারছে না । প্রথমে তার প্রিয় বন্ধু বাপ্পীর কাছে একটি মেছে উঠে , সবাই টিউশনের জন্য বললে ও, টিউশন না পাওয়ায় একবেলা না খেয়ে থাকে । কখনো নিজের টাকায় আবার কখনো বাপ্পীর টাকায় । বাপ্পী একটা ছোট কারখানায় ম্যানেজারের কাজ করত । অনেক কষ্টে কিছু বন্ধু বান্ধবের সাহায্যে একটা টিউশন ম্যানেজ হয় ।
আমার স্ত্রী মাদারটেকের শিখন কোচিং এর দশম শ্রেণির ছাত্রী। আমি ওদের উচ্চতর গণিত ক্লাস নিতাম।
তখন সম্পর্কটা খুবই ভালো ছিল । আমার ব্যাপারে সম্পর্কের আগে সকল বিষয়ে কথা বলা শুরু করে আমার শ্বাশুড়ি । তবে আমার বৌয়ের কোচিং শিক্ষক হওয়ার কারনে , আমার স্ত্রী (সাবেক প্রেমিকা ) আমাকে পছন্দ করে , সব কথা তার মায়ের সাথে শেয়ার করে ফলে তার কুদৃষ্টি বলেন আর সুদৃষ্টি বলেন , আমার উপরে পড়তে থাকে । কোচিং এর নাহিদ ভায়ের কাছ থেকে নম্বর নিয়ে আমাকে তার বাসায় পড়ানোর আমন্ত্রন জানায় , তারা ভালো হওয়ায় আমি রাজি হয়ে যাই । অনেকটা তার প্রয়োজনে কিংবা আমার প্রয়োজনে তাকে পড়াতে রাজি হই । কিছু দিন গেলে আমার ছাত্রীর মা আমাকে ফোন দিয়ে বলে , আমি নাকি তার মেয়ের হাত ধরেছি । যা ছিল মিথ্যা , আমি এর বিরোধিতা করে না পড়ানোর কথা জানাই ।ঐ দিন আমার সহকর্মী ফাহিম ভাইয়ের মা মারা যায়। আমি তার জানাজা সম্পন্ন করে ওদের বাসায় যাই। এর আগে ৫০০০ টাকা ধার নেওয়ার কারনে , একটু ভদ্রভাবে বলি , আমি পড়াবো না । এবং তাদের বাসায় যাওয়া বন্ধ করি ।
তখন থেকে আমার শ্বাশুড়ি আমাকে বারবার ফোন দিতে থাকে এবং বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করে , যেমন আমি প্রেম করি কিনা ? ও ওর ব্যাপারে নানা কথা । আস্তে আস্তে আমাদের মাঝে সম্পর্ক তৈরি করে আমার ছাত্রীর মা । আমার কাছে তার মেয়েকে সকল দিক থেকে ভাল লাগায় আস্তে আস্তে ভালবেসে ফেলি কারন তার সাথে ১৯ এপ্রিল ২০১৮ কোরআন শরীফ সাক্ষী রেখে কিছু বিষয় নিয়ে শপথ হয় যা ছিল -
হাসুর বিয়ে হয় ২৪ আগস্ট ২০১৯ তারিখে সেক্ষেত্রে আমার বৌ এর চেয়ে আমার শ্বাশুড়ির অবদান অনেক, যা ধর্মীয় ভাবে কিন্তু কাগজে কলমে হয় ১৩ জানুয়ারি ২০২২ তারিখে । আমাদের সম্পর্ক হয় ১৯ এপ্রিল ২০১৮ সনে ।
(এই গল্পে হাসুর ভালবাসার করুন মৃত্যু ঘটে , বিয়ে পর ভুলে যায় সকল শর্ত । যা অনেকটা বিনা মুলধনে ব্যবসার মত।
অনুর মায়ের কথা মত নিজের বাচ্চা ফেলে দেয়া, স্বামী স্ত্রীর দেখা করার সময় দরজায় মায়ের দারিয়ে থাকা। নির্দিষ্ট সময় বেঁধে দেয়া।
স্ত্রীর কথায় ওঠা বসা করা পুরুষ নামের নারী বেলো কিছুই করতে পারে নি, বৌ এর কথা মত রাতকে দিন আর দিনকে রাত বলেছেন।
হাসুর মা বাবা কে অবজ্ঞা করা , সম্মান না করা , হাসুকে কথায় কথায় গালি দেওয়া ,হাসুর কষ্ট ও অবস্থা না বুঝে প্রাপ্তি আদায় ও তর্ক করা।
মামলাবাজ নানার মত মামলা করে এবং কাবিননামার টাকার স্বপ্ন দেখে।
ওর মামলাবাজ নানা নুর ইসলাম শেখ এবং ওর মামা রানা ও রাজু কে বারবার বলা হলেও কোন কথা শুনিনি।
ওর নানী আঙ্গুরি বেগম অনেক মজা করলেও উনি সর্বদা উনার মেয়ে এবং উনার নাতনিকে গুরুত্ব দিয়েছেন।
ওর মায়ের বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কথাবার্তা ও বাচ্চা নষ্ট করার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে।
হাসুর প্রিয় মা, বাবা তার পুত্রবধুর সাথে কথা বলতে চাইলে কথা না বলা এমনকি ফোন রিসিভ না করা ,হাসুর ছোট ভাইকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে ছোট মনের পরিচয় বহন ,, একটি সুখের সংসারে অশান্তির বার্তা )
ভালবাসার শুরু
1. দুজনে দুজনের পরিবার আপন ও ভালো চোখে দেখবে ।
2. ওর ভাইকে আমার ভাই এবং আমার ভাইকে ওর ভাইয়ের মত দেখবে।
3. আমি বা অন্য কাউকে ভালবাসতে পারবো না ।
4. দুজনে , দুজনের কথার গুরুত্ব দিবে । ও পরস্পরের সকল সিদ্ধান্তে একে অন্যকে গুরুত্ব দিবে ।
5. কেউ অন্যের শোনা কথা কিংবা নালিশ না জিজ্ঞেস করে বিশ্বাস করা যাবে না ।
6. কেউ কাউকে বিপদে ছেড়ে যাবে না ।
7. আমার মা-বাবা মানে ওর মা-বাবা আর ওর মা বাবা মানে আমার মা-বাবা ।
আরো কিছু শর্ত ছিল , যা আমার স্ত্রী এখন ভুলে গেছে , ভুলে গেছে উপরের গুলোও ।
এরপর থেকে ওদের বাসায় দেখা করতে যেতাম তখন ওর মা অনেক আদর করত, নানান ধরনের খাবার তৈরি করত ; একেবারে যেন আমি পরিবারের সদস্য । কিছুদিন যাওয়ার পর আমার ভাই , চাচাতো ভাই , ফুফাতো ভাই এদের সাথে পরিচয় করে দেই । সে তাদের মাধ্যমে আমার খোজখবর নিতে থাকে । এক পর্যায়ে সে তাদের মাধ্যমে কিছু ফালতু জিনিস যেমন আমার মা-বাবা সম্পর্কে খারাপ কথা , আমাকে অন্য ব্যক্তি কেমন জানে(যেমন -বাড়িওয়ালা, টিউশন বাসায়, কিংবা কোন ছাত্রী ) এ বিষয়ে খোজখবর নিতে থাকে ।
এক পর্যায়ে জানতে পারে আমার বাড়িওয়ালার সাথে খালার মত সম্পর্ক তার দুটি মেয়ে আছে । তার সাথে আমার মা বাবার সম্পর্ক ভালো । তিনি ও তার মেয়ের খবরটা শুনে আমাকে বাসা ছাড়তে বলে । আমি বাসা ছাড়ার কথা বলতে পারি নি সম্পর্ক ভালো থাকার কারনে । এদিকে আমি তার বাসায় নতুন একটি প্রতিষ্ঠান শত লড়াই করে আমরা তিনজনে দাড় করাই । ফলে বাসা ছাড়ার কথা তখনই বলতে পারি নি । আস্তে আস্তে প্রায় ১৫০০০০ টাকা খরচ করে প্রতিষ্ঠানটি সরিয়ে ফেলি । যা ছিল স্বার্থপর মানুষের স্বার্থ এবং ওর(আমার স্ত্রী) কথা শোনার ফল ।অনেক কষ্টে আন্টি , বড়আপু সবাইকে কষ্ট দিয়ে বাসা ছেড়ে দিই । আমার শ্বাশুড়ি আমাকে ১০০০০০ (কোচিং দেয়া থেকে শুরু করে বাসা ছাড়া পর্যন্ত ভেঙে ভেঙে) টাকা দিয়ে সহায়তা করে । তখনও বিয়ে হয় নি ফলে তার উপর আস্থা বাড়তে থাকে ।
আমাদের বিয়ে।
এক পর্যায়ে আমি তাকে বলি , আন্টি আমরা বিয়ে করতে চাই। তাকে অনেক কষ্টে রাজি করিয়ে বিয়ের আয়োজন করতে বলি। আমার হাতে কোন টাকা ছিল না , শুধু 1000 টাকা ছিল ওর বিয়ের বয়স ও হয় নি ।
বাসাটা ছিল ইবনে সিনা স্কুলের পুরাতন ভবনের ২য় তলা। শ্বাশুড়ি একজন কাজি , ও একজন সাক্ষি নিয়ে আসে । আমার শ্বাশুড়ি ও বৌ মােহরানার কথা জিজ্ঞেস করলে আমি ৪ লক্ষ বা ৬ লক্ষ দিতে বলি । কিন্তু আমার শ্বাশুড়ি ইবরাহিম কাজির সাথে আলাপ করে ১০ লক্ষ দিতে বলে । কাজি আমাকে জিজ্ঞেস করলে , আমি তাদের খুশির জন্য মৌনসম্মতি জানাই । সত্য কথা বলতে, তখন এই বিবাহ সম্পন্ন হয় ২৪ আগস্ট ২০১৯ তারিখে, কিন্তু সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আইনগত ভাবে বিবাহ হয় নি। বিবাহ শেষ হলে , আমি বাসায় চলে যাই। তখন আমার শ্বশুর বাসায় ছিল না । ছিল না আমার মা -বাবা । কিছু দিন গেলে আমি তাদের বাসায় আমার শ্বশুড়কে না জানিয়ে ঐ বাসায় থেকে তাই, যদিও আমার শ্বাশুড়ি ব্যাপারটা জানে। প্রথমে সে বাধা দিলে ও অনেক কষ্টে তাকে রাজি করিয়েছিলাম।
এরপর এক সপ্তাহ থেকে দুই সপ্তাহ পরে একদিন জোর করেই ঐ বাসায় থাকি তখনও আমার শ্বশুর জানে না । আমার শ্বাশুড়ি আমার বউয়ের রুম ছেড়ে যায় প্রায় রাত একটায় । সকাল 6 টায় আমার শ্বশুর ঘুম থেকে উঠে বাজারে যায় তখন আমি বাসায় চলে যাই ।
আমার ছোট ভাই ও ফুফাতো ভাই হাসান ওদের বাসায় যেত । ওরা কোচিং এর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করত । আমার ফুফাতো ভাই ওকে ভাবি বলেই ডাকত কিন্তু আমার ছোট ভাই আপু বলে ডাকত বলত , বিয়ের পরে ভাবি ডাকবে । আমার ভাই একটু কালো ও এই কথা বলার কারনে তাকে একটু অপছন্দ করা শুরু করে । তাছাড়া আমার ফুফাতো ভাইয়ের সাথে ওর সম্পর্ক সমবয়সী বন্ধুর পর্যায়ে চলে যায় । আমি একদিন তাকে বলি , ও তোমার সাথে এত ঘনিষ্ঠ কেন , সে উত্তরে বলে, আমরা সমবয়সী, ও আমার বড় ভাই । আমার মনটা খারাপ হয়ে যায় । চিন্তা করি , শালার ছোট ফুফাতো ওর কারনে বড় ভাই হইয়া গেসে।
কিছুদিন পরে আমার মা ঢাকা আসে । হাসানের কাছ থেকে কোচিং ও আমার মায়ের সকল এর কথা শুনে আমার শ্রদ্ধেয় শ্বাশুড়ি আমাকে না জানিয়ে তার মেয়েকে পাঠিয়ে দেন । আমার মা আমার বিয়ের খবর শোনায় একটু কষ্ট পায় কারন এর আগে ওকে দেখে গিয়েছিল এবং আমাকে বলেছিল পছন্দ হয়েছে । যদিও মায়ের এই কথার কারনে আমি বিয়ে করেছিলাম । মা তো আমার বাসায় ওকে দেখে অবাক , আমি ও কিছু বলি নি । সে রাতে ও রইল । মা কোন ভাবে আমার বাবা , চাচা , আমার বড় ফুফাতো ভাই সুমনকে ম্যানেজ করল । মা ওকে দিয়ে রান্না সহ অনেক কাজ করাল , আমি ও ব্যস্ত ছিলাম । একদিন দুপুরে আমারা ভাত খাচ্ছছিলাম , আমার পেটে খুদা থাকায় আমি দ্রুত খেয়ে উঠি । পরে শুনতে পারলাম ও খায়নি , তাছাড়াও ঔ দিন কুমার রান্না করা হয়েছিল যা তিনি খান না । এটা নিয়েও কম কথা শোনায় নি আমার শ্বাশুড়ি । এরপর থেকে তিনি সর্বদা কথা দিয়ে তার মেয়ের কাছে বিষের মত করে ফেলেছিলেন আমার মাকে । যা আমি সন্তান হিসেবে কখনই মেনে নিতে পারি নি ।
2019 সালের জে এস সি পরিক্ষার পর মা চলে যায় । আমার চাচা আমার মাকে দোষ দিতে থাকে । মা দোষ স্বীকার করে , আমার বাবার প্রিয় ছেলে হওয়ার কারনে আমার বাবা ও অনেক কষ্ট পায় । আমার স্ত্রী আবার চালাকি করে আমাকে না জিজ্ঞেস করে চাচা কে একটি ছবি পাঠিয়ে দেয় ।ফলে মাকে দোষ দেওয়ার সুযোগ হয় , মা ও সে যাতে কষ্ট না পায় সে কারনে নিজে স্বীকার করে নেয় ।
এভাবে অনেকদিন কেটে যায় এদিকে আমার বোনের ও বিয়ে হয় নি , বাবা অনেকটাই হতাশ কারন গ্রামে বোনকে বিয়ে দিয়ে বড় ভাই বিয়ে করে । অনেক কথা শুনতে হয় আব্বুকে । কারন একদিকে মেয়ের বিয়ে , অন্যদিকে আমার নতুন বৌ ।
আব্বু একদিন আমাকে ও আমার বউকে একটি ছেলের ঠিকানা দেয় এবং আমাকে আর ওকে যেতে বলে ।
আমরাও ঐই ছেলের অফিসে যাই এবং আমি ও আমার স্ত্রী কথাবার্তা বলি । আমি যতটুকু না রাজি হই তার চেয়ে ও বেশি রাজি হয় এবং আমার বোন ও ঐ ছেলের সাথে বিবাহ ঠিক হয় , পরে আমার স্ত্রী আমার বোনের সাথে কথা বলিয়ে দেয় এক পর্যায়ে ওরা নিজেরাই রাজি হয়।
আব্বু অনেক দিন পরে মহান আল্লাহ তালার ইচ্ছায় সকল হতাশা কাটিয়ে ওঠে । আমার বোনের বিয়ে ঠিক হয় । আব্বু ব্যাংক থেকে লোন , ধার , ও জমি বন্ধক রেখে চার লাখ টাকা খরচ করে বোনের বিবাহ সম্পন্ন করে । যখন বিয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান হয় তখন আমার শ্বাশুড়ি প্রথমে আমার বউকে আমাদের বাড়ি দিতে আপত্তি জানায় । পরে আমার চাচা তাদের বাসায় আসার পর যেতে দিতে রাজি হয় । আমার বউ কে একটি শাড়ি আমি নিজের টাকায় কিনে দিয়ে নিয়ে যাই ।
আমার শ্বাশুড়ি যেতে দিলেও শর্ত আরোপ করে যে আমার বাড়িতে নিলে কোন কিছু দিতে পাড়বে না । তাও অনেকটা প্রতিজ্ঞার মত । আমি ওকে নিয়ে বাড়িতে খুবই সকালে পৌছাই । গ্রামের রীতি অনুযায়ী , সকলে নতুন বউকে বরন করে নেয় । তখন ওর বয়সী আমার খালাতো বোন আমার সাথে এসে কথা বলে এবং আমার কাধে হাত দেয় , যা আমি খেয়াল করি নি । কারন আমি ওকে যে বরন করতে ছিল আমি ওই দিকে খেয়াল করি। ঘরে ওঠার কিছুক্ষন পরে ও খ্যান
খ্যান শুরু করে ।
আমার কাছে সে বাজারে যেতে চায় । নতুন বউ বাজারে যেতে চায় ব্যাপারটা শহরে ক্যামন জানি না গ্রামে আপত্তিকর । ফলে আমার মা একটু রেগেই বলে তোরা আমার মান উজ্জত খোয়াবি ? যা আমার বউয়ের ভালো লাগে নি । এ নিয়ে আমাকে অনেক কথা শোনায় যেমন , কী হুজুর আরও অনেক কিছু। অবশেষে আমার চাচি বোরকা পড়িয়ে বাজারে পাঠায় তার কাপড় চোপড়ের কাজ সম্পন্ন করার জন্য ।
বাড়ি থেকে রাস্থায় বের হওয়ার পর আমার শ্বাশুড়ি আমার সাথে কথা বলে ।
”আমার মেয়েকে এখুনি ঢাকা পাঠিয়ে দেও । আমি বললাম ‘ আচ্ছা ঠিক আছে “ । আমি মনে মনে চিন্তা করলাম ,কোন সমস্যা হলে শুনছি , শ্বাশুড়িরা মিটিয়ে দেয়। আর এ কোন শ্বাশুড়ি । আমি অনেকটা রেগে আমার বউকে বললাম , এখুনি রওয়োনা দেও ।
আমার শ্বাশুড়ির ফোন না কুটনীতি বলতে পারছি না . 5-10 মিনিট পর পর চলতেই থাকে।
এক থেকে দুদিন পর আব্বু ও ফুফায় আমার বউকে বিবাহের বাজার করতে যাওয়ার আগে বার বার জিজ্ঞস করলে কোন কিছু কিনতে আপত্তি জানায় আমার বউ । বিয়ের সকল কাজ শেষ হওয়ার পর আমরা ঢাকা ফিরে আসলে ওকে ওর বাসায় দিয়ে আমি আমার বাসায় চলে যাই ।
একদিন যেতেই আমার শ্বাশুড়ি ও বউ আমাকে ফোন দিয়েই আমার খালাতো বোনের ব্যাপারে আজেবাজে কথা বলতে থাকে । আমি বুজিয়ে বললেও আরা ব্যাপারটাকে অন্য দিকে নিয়ে যায় । আমি ও আমার শ্বশুর শুনে যাই কিন্তু কোন কাজে আসে নি । তাদের কথা মেনে নিয়ে আমাকে ক্ষমা চাইতে হয় , আমিও ব্যাপারটা নিয়ে বাড়াবাড়ি বন্ধ করে দেই ।
করোনা মহামারী
এর পর কিছুদিন চলার পর ,
করোনা মহামারি এদেশে আঘাত হানে । করোনা মহামারীতে সারাদেশে লকডাউন দিলে আমি ও বাড়ি চলে যাই। বাড়ি গিয়ে নানা ধরনের সমস্যা দেখে ঢাকায় আসার চিন্তা করি। ভালবাসার টানে কয়েক দিন যাওয়ার পর ভালবাসার কাছে আসার জন্য মা বাবা সবাইকে ফাঁকি দিয়ে ৯ ই এপ্রিল ২০২১ তারিখে পালিয়ে গাড়িতে উঠি, তখন সহজেই গাড়ি পাওয়া যায় না। কিছু মাইক্রো গাড়ি রিজার্ভ করে ট্রিপ টানে। সেই গাড়িতে উঠে পরি। আমার শ্বশুর শ্বাশুড়ি ফোনে বারবার আসতে নিষেধ করে। আমি অনেক কষ্টে ঢাকায় আসি। পরের দিন সকালে, আমি ঘুম থেকে উঠে, গোসল করে ওদের বাসায় যাই।
সকালে আমি গোসল করে পুরোপুরি ফ্রেশ হয়ে আমার বউয়ের সাথে দেখা করতে যাই ।আমার বউ বেলকুনি থেকে দাড়িয়ে তাকিয়ে থাকে , কোন কথা বলে নি ।কিছুক্ষন পরে আমার শ্বাশুড়ি আমার জন্য খাবার রাস্থায় নিয়ে আসে । আমি চরমভাবে নিতে আপত্তি জানাই । শুধু বলি “ আম্মা , আমার খাবারের জায়গা আছে । শুধু চিন্তা করি , আমার বাসায় জায়গা হল না , আমার বউ ও সেই স্ত্রীর মত যে স্বামীর ইতালি থেকে আসার খবর শুনে বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে । আমার ওর উপর মনটা খারাপ হয়ে যায় । অনেক কথা শুনতে হয় , আমি বেয়াদব ,ওর মায়ের কষ্ট করে তৈরি করা খাবার নেই নি , তাছাড়া আমার জন্য নতুন টিফিনবক্স কিনেসে। আব্বুও মা এ খবর শুনে একটু কষ্ট পায় । আমি নিজেও অনেক কিছু চিন্তা করি , অনেকটা রাগের সাথেই বলি আমি তোমার সাথে থাকব না ।এদিকে আমার হাত খালি থাকায় আমার নিজের কোচিং এর সকল শিক্ষর্থী থেকে টাকা তোলার জন্য ফোন দেই । সেক্ষেত্রে একটি ছাত্রী নিয়ে আমার বউয়ের সাথে আগে থেকেই সমস্যা ছিল । যেমন -কোরআন শপথ করে তার সাথে কথা না বলা , আরও অনেক কিছু । আমি সেটা পারি নি , কারন কোচিং এ আরও দু জন অংশীদার ছিল , ফলে কোচিং চলত কোচিং এর মত , আমি তার সাথে চলতাম আমার মত । লকডাউনে টাকার সমস্যার কারনে সকলের কাছে ফোন দিই ।
এরই মধ্যে আমার শ্বশুর তার বাসায় নিয়ে আসতে বলে আমার শ্বাশুড়ির কাছে । আমার বউ আমাকে নিয়ে আসে । তখন আমার বাসা পুরোপুরি ছাড়ি নি কারন তাদের কথাই একমাস থাকার আভাস পাইছিলাম । পরে কোথায় থাকব ,বুঝে উঠতে পারি নি। তাই আমার নিজের বাসাটা আর ছাড়া হয় নি।
আমি আমার সকল জিনিস পত্র নিয়ে তাদের বাসায় উঠি ।একদিন , দুদিন পরই ঝামেলা শুরু হয় । আমার স্ত্রী কে আমার কাছে ঘুমাতে দেয় না , তাকে অন্য বিছানা যেখানে আমার শ্বশুর , শ্বাশুড়ি , ও আমার ছোট শালা , আমার স্ত্রী থাকে । মাঝে মাঝে আমার সাথে থাকলে ঐ দিন আমার শ্বাশুড়ি তার মেয়েকে পড়ানোর জন্য রাত 3 টা, 4টা পর্যন্ত সজাগ থাকত ,শুধু তাই নয় আমরা ঘুমাতে গেলে সে ঘুমাতে যেত না , আমাদের রুমের দরজার সামনে বসে থাকত । তিনি আমার স্ত্রীকে আবার ঘুম থেকে উঠানো শুরু করত সকাল 6 টা থেকে 8টা পর্যন্ত । সেটা হত বিভিন্ন সুরে। মাঝে মাঝে আমার শ্বাশুড়ি রাগ করে আমার স্ত্রীর বই ও ছিড়ত। আমার শ্বশুর সর্বদা নীরব দর্শক , কিংবা ঘুমিয়ে থাকত । সে সবসময় তার স্ত্রী ছাড়া কারও কথা শোনেন নি । একটা ছোট ঘটনা আমি শ্বশুর বাড়ি, আমার স্ত্রী বই পড়ছে, পড়া শেষে আমার স্ত্রীকে তার মা অন্য রুমে ঘুমাতে বলল আমি ফোনটা চার্জে দিলাম । আমি আমার রুমে শুয়ে আছি। রাত তখন ১১.৩০ এর চেয়ে একটু বেশি হবে। আমার একটা কোচিং এর ছাত্রী ফোন দিল ,যাকে বেতন এর জন্যে এর আগে ফোন দিছিলাম, ফোনটা আমার শ্বাশুড়ি রিসিভ করে।
ফোন থেকে, "হ্যালো , কি কথা বলেন না, কেন ?
আপনি কি চিনেন না, হ্যালো।
আমার শ্বাশুড়ি ফোনটা কেটে দেয়। এবং আমাকে অবিশ্বাস শুরু করে।
ঐ রাতে অনেক ঝগড়া হয়, আমি ও বুঝাতে ব্যর্থ হই। অনেক
কিছু সহ্য করতে না পেরে আমি ব্লেড দিয়ে নিজের হাতে তিনটা টান দিই। হাত থেকে ৪০০ মিলি এর বেশি রক্ত ঝরে। মে দুর্ঘটনা ঘটে আমার জীবনে , যে দাগ তৈরি হয়েছে তা আমার মৃত্যু পর্যন্ত বহন করতে হবে ।
রমজান মাসে আমি আমার শ্বাশুড়ি মিলে ইফতার তৈরি করতাম, তবে সে যখন আমার পরিবার নিয়ে নেতিবাচক কথা বলত , যা কখনোই মেনে নিতে পারতাম না। এভাবে রমজান মাস কেটে যায় ঐ ঈদে করোনা মহামারী ও লকডাউন এর কারনে আমি আমার বউকে কিছুই দিতে পারি নি , কারন মহামারীর কারনে বের হতে পারি নি । যদিও শ্বশুর বাড়িতে এটা আমার প্রথম ঈদ ছিল আমিও কিছু নেই নি । ঈদ চলে গেল, আমার একটা ছোট চাকরি হল , খিদমাহ ড্রাগ আউটলেট এ অনলাইন মেডিসিন বিক্রয়ের জন্য CCR পদে । আমি ওদের বাসা ছেড়ে চলে যাই, যেতে ইচ্ছে করছিল না তাও যেতে বাধ্য হই । কিছু বই রেখে যেতে চাচ্ছিলাম , তা রাখতে দিল না। আমাকে কিছু টাকা দিতে চায়, কিন্তু আমি নেই নি।
ওর মামলা বাজ নানাকে এবং ওর ওর মামা রানাকে বারবার বলা হয় কিন্তু কোন ধরনের ব্যবস্থা নেননি। বরঞ্চ ওর মামলা মাছের নানা আরো মামলার ব্যাপারে উস্কানি দিয়েছেন। এবং পরবর্তীতে মামলাও হয় যা পরিপূর্ণভাবে মিথ্যাও বানোয়াট।
(আরও আছে)
অবিশ্বাসী চরিত্রহীন স্বামী
বর্তমান যুগ আধুনিক নয় , নারীদের যুগ । এটা কোন পুরুষ কিংবা কোন নারী ব্যঙ্গমূলক কথা বলতে পারেন , কিন্তু একটু ভাবুন